ক্লাস এইটে ওঠার পরে গ্রামের স্কুল থেকে অন্য গ্রামের স্কুলে যেতে হবে বলে বাড়ি থেকে পড়াশোনা ছাড়িয়ে দেয়... অতোটা রাস্তা... রাস্তাটাও ভালো না। বাড়ি আসতে সন্ধ্যে হয়ে যায়। বিয়ের জন্য কথাবার্তাও শুরু হয়। একবছর কান্নাকাটি জোর জবরদস্তি করে পাশের গ্রামের স্কুলে ভর্তি হয় মেয়েটি। অভাবের সংসারে মেয়ে হয়ে নতুন বই কিংবা টিউশন নেওয়ার অাশা স্বপ্ন। অন্যের কাছে বই চেয়ে পড়াশোনা করে শেষঅবধি কলেজ পাশ করে।
চাকরি করা হয়ে ওঠেনি শেষ অবধি। চাকরি করা যাবেনা এই শর্তে স্বচ্ছল ঘরের একমাত্র পুত্রবধূ হয়ে এসেছিলো সেই মেয়ে। তারপর তার কাজ হয় নিজের মেয়েদের বড়ো করে তোলার যুদ্ধ। ছোটো থেকেই তাদের মনে গেঁথে দেওয়া হয় বড়ো হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতেই হবে তোমাদের। তার মেয়েরা আজ প্রতিষ্ঠিত।
এটা আমার আম্মুর গল্প...
চাকরি করা হয়ে ওঠেনি শেষ অবধি। চাকরি করা যাবেনা এই শর্তে স্বচ্ছল ঘরের একমাত্র পুত্রবধূ হয়ে এসেছিলো সেই মেয়ে। তারপর তার কাজ হয় নিজের মেয়েদের বড়ো করে তোলার যুদ্ধ। ছোটো থেকেই তাদের মনে গেঁথে দেওয়া হয় বড়ো হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতেই হবে তোমাদের। তার মেয়েরা আজ প্রতিষ্ঠিত।
এটা আমার আম্মুর গল্প...
জমিদারবাড়িতে বিয়ে হলেও স্বামীর সাথে এককাপড়ে সন্তানসহ বাড়ি থেকে বের হয়ে আসে। হাতে একটা পয়সাও নেই। শুধু আছে কয়েকবিঘা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া জমি। নিজের গয়না বিক্রী করে সেই টাকায় কিছু জমি কিনে শুরু হয় জীবন সংগ্রাম। নুন আনতে পান্তা ফুরানো সংসারে সন্তানের ক্যান্সার ধরা পরে। তার চিকিৎসায় জমিজায়গা বিক্রী হয়ে যায়। তবুও হাল ছাড়েনা মেয়ে। গ্রামের স্কুলে ফোর অবধি প্রথম হয়েছে সে... বিয়ের কারণে আর পড়াশোনা না হলেও পাঁচ সন্তানকে শিক্ষা দেয় কষ্ট করেও। মুরগী পুষে, গরু , ছাগল পুষে সংসার চলে ঠিক।
এটা আমার নানীজানের গল্প।
এটা আমার নানীজানের গল্প।
ষাটের উত্তাল দশক। স্বামী অধিকাংশ সময়েই ফেরার। বিখ্যাত নকশাল আন্দোলনের জের। বাড়িতে প্রতিদিনই কেউ না কেউ লুকিয়ে থাকে। তারপর আছে আশ্রিত মানুষেরা। ছোটো ছোটো সন্তানদের নিয়ে সংসার। ডিম ,দুধ সব্জি বেচে সংসার চলে। চাষবাসের দায়ও তার ঘাড়ে.... একা হাতে সব সামালায় কন্যা।
এটা আমার দাদির গল্প।
এটা আমার দাদির গল্প।
জমিদার বাড়িতে বিয়ে হয়েছে জমিদারের কন্যার। অপূর্ব সুন্দরী কন্যা আবিষ্কার করে স্বামীর সাথে অন্য নারীর সম্পর্ক।
মেয়ে আর একদিনও শ্বশুরবাড়িতে থাকেনি।
ঐ সময়ে শ্বশুরবাড়ি স্বামী ছেড়ে চলে আসা একটা অন্যরকম লড়াই।
গল্পটা আমার মামাবাড়ি সম্পর্কিত এক নানীজানের।
মেয়ে আর একদিনও শ্বশুরবাড়িতে থাকেনি।
ঐ সময়ে শ্বশুরবাড়ি স্বামী ছেড়ে চলে আসা একটা অন্যরকম লড়াই।
গল্পটা আমার মামাবাড়ি সম্পর্কিত এক নানীজানের।
প্রেম করেছে মেয়ে। বাড়ি থেকে বিয়ে দিতে রাজী নয়। ছেলের সবদিক থেকেই উপযুক্ত। তাও বাড়িতে রাজী না। মেয়ে নিজে পছন্দ করে বিয়ে করবে তাও আবার প্রেম করে ? ছিঃ লোকে কি বলবে? মোদ্দা কথা , এটা সেই যুগে অসম্ভব একটা ব্যাপার ছিলো। ভালোবাসাকে মর্যাদা দিতে সেই "অসভ্য" মেয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। অবাধ্য মেয়ের সাথে বাপের বাড়ি সম্পর্ক রাখেনি বহুদিন। সেই যুগে এটা করতে অনেকটা সাহস লাগতো। গল্পটা আমার আম্মুর ফুফুআম্মার গল্প।
নারীরা কখনো কর্মহীন হয়না। প্রতিটা নারীর জীবনে থাকে অনন্য লড়াইয়ের গল্প। কেউ জয়ী হয়, কেউ হয়না।
কিন্তু লড়াইটা থেকে যায়। গল্পে কিংবা ইতিহাসে।
কিন্তু লড়াইটা থেকে যায়। গল্পে কিংবা ইতিহাসে।
কর্মজীবি নারীদের দিনে সব নারীদের সবরকম লড়াইকে কুর্ণিশ।
No comments:
Post a Comment